পাবনায় নিজের স্ত্রীর- আগের তুলনায় সারাদেশে যৌতুকের জন্য নারী নির্যাতন অনেকটা কমে গেছে বর্তমান সরকারের তৎপরতায় । তার পরেও প্রতিনিয়ত বহু সংখ্যাক নারী যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হচ্ছে স্বামী দ্বারা। নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক গৃহবধু আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন ।তেমনি পাবনার ঈশ্বরদীতে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করলেন মুন্নি নামের এক গৃহবধু। জানা গেছে
পাবনার ঈশ্বরদীতে মাদকাসক্ত স্বামীর অমানবিক নির্যাতন, এডিট করা পর্ণোগ্রাফী সোস্যাল মিডিযায়র মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি ও আদরের নাড়ি ছেঁড়া ধন একমাত্র কন্যা সন্তান কে কেড়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অত্যাচার হুমকি ধামকি থেকে বাঁচতে মুন্নি নামক এক গৃহবধু গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৩০ মে) রাতে ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারী পশ্চিমপাড়া গ্রামে। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায় , সলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারী গ্রামের মুন্তাজ আলীর মেয়ে মুন্নির সঙ্গে ২০১০ সালে রুপপুর ফটু মার্কেট এলাকার মৃত নিয়ামত আলীর ছেলে রেজাউল ইসলামের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
এমন ঘটনার বিষয়ে মুন্নির চাচা ডাবলু অভিযোগ করে বলেন, বিয়েতে যৌতুক হিসেবে মটর সাইকেল, আসবাবপত্র ও স্বর্ণালংকারসহ ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে রেজাউল মুন্নির পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেই। তারপরও থেমে থাকেনি যৌতুক লোভী রেজাউল।
বিয়ের পর থেকে বারবার যৌতুকের জন্য মুন্নিকে অব্যাহত ভাবে চাপ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে মুন্নি অতিষ্ঠ হয়ে রেজাউলের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। এরপরেও রেজাউল বিভিন্ন সময় মুন্নির বাবার বাড়িতে এসে মুন্নিকে মানসিকভাবে নির্যাতন চালিযে যেতে থাকে।
সম্প্রতি মুন্নির পরিবারের কাছে টাকা চাই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় নতুন ফন্দি আটে রেজাউল। মুন্নির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোর জন্য মুন্নির বেশ কিছু ছবি কম্পিউটারে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে পর্ণোগ্রাফী ছবি তৈরি করে।
মুন্নির পরিবারকে এসব ছবি দেখিয়ে রেজাউল নানাভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এদিকে রেজাউলের অভিনব এসব প্রতারণায় মানসিকভাবে বিধ্বস্থ হয়ে পড়ে মুন্নি। এরই এক পর্যায়ে রাতে মুন্নি তাঁর শয়ন কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।
মুন্নির স্বামী রেজাউলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুন্নির বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন।
এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার বিষয়ে সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু বলেন, ছেলেটা ড্রাগ এ্যাডেক্টেড ছিলো। আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম দুই পরিবারের মিল করে সংসার করানোর জন্য এবং মুন্নির বাচ্চা টা কে যতদিন পর্যন্ত মিমাংসা না হয়, মা মুনির কাছে রাখার জন্য।
কিন্তু পাষন্ড রেজাউল ছেলেটিকে নিয়ে যায় তার কাচে এত করে মুন্নি মেয়েটি মানসিক ভাবে অনেকটা ভেঙ্গে পড়ে। আমার জানা মতে, যৌতুক হিসেবে ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নগদ নিয়েছিল রেজাউল এবং গ্রামের অনেকের কাছে শুনেছি মেয়েটির ছবি নগ্ন নাকি ফেসবুকে ছেড়ে দিবে।
এ ব্যপারে ঈশ্বরদী থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, মুন্নির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো আসেনি । অসলে তা দেখে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।অপরাধী যেই হোক না কেন বিন্দু পরিমান ছাড় পাবে না। সমাজে অপরাধীরে আইনের অওতায় আনা পুলিশের কাজ।